অনু আড্ডা মাধ্যমে আমি বন্ধুদের মানসিক চিন্তাভাবনা তুলে আনার চেষ্টা
করছি। যারা মানসিক কষ্টে ভুগছো তাদেরকে জানিয়ে দিতে চাই, তুমি একা নও, তোমার মত
আরো অনেকেই আছে যারা প্রত্যেকে জীবনে একটি কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়েছে। সময়ের
স্রোতে নিজেকে আবিষ্কার করেছে নতুন ভাবে। অনু আড্ডা পর্ব ৮ এ আছে কলকাতার বন্ধু
পূর্নেন্দু দাস। সো, আজ থেকে আমাদের আড্ডা আন্তর্জাতিক হয়ে গেলো। তো শোনা যাক
ভারতের বন্ধু পূর্ণেন্দুর জীবনের কিছু কথা।
শুভ্রঃ পূর্ণেন্দু আমাদের আড্ডায় ভারত থেকে একজন বন্ধুকে পেয়ে আমরা
আনন্দ বোধ করছি। কেমন আছো তুমি?
পূর্নেন্দুঃ ভালো আছি।
শুভ্রঃ আমাদের সবার সেক্সের অভিজ্ঞতা হয়েছে বলতে গেলে স্কুল জীবনে।
তোমার কখন হলো?
পূর্নেন্দুঃ প্রথম
সমকামিতার অভিজ্ঞতা হয় ক্লাস সেভেনে পড়ার সময়। প্রথম দেখায় এক ক্লাসমেটের প্রেমে
পড়ে যাই।
শুভ্রঃ কেন
তুমি একটা ছেলের প্রেমে পড়লে, মেয়েদের প্রেমে তো পড়তে পারতে?
পূর্নেন্দুঃ মেয়েদের
সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো। মেয়েদের সাথে সম্পর্ক থাকা সত্বেও সুদর্শন আর মিষ্টি
দেখতে ছেলেদের দেখে বুকের বাম দিকে একটা চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করতাম। কেন করতাম
তখন সেটা বুঝতে না পারলেও সেই ক্লাসমেটকে দেখার পর বুঝতে পারি যে আমি একজন সমকামী।
শুভ্রঃ প্রথম
হস্তমৈথুন কবে করলে? এখনো কি এটা করো?
পূর্নেন্দুঃ ক্লাস
সিক্সে পড়াড় সময় প্রথম হস্তমৈথুন করি, সে এক অসাধারণ অনুভূতি। তারপর নিয়মিত করি।
স্টিল নাউ। কখনো কখনো দিনে তিন চার বার করে ফেলি, যখন সেক্সুয়ালি খুব এক্সাইটেড
থাকি। আবার মাঝে মাঝে কাজের চাপে অনেক দিন করাই হয় না।
শুভ্রঃ তুমি
বলেছ মেয়েদের সাথে তোমার রিলেশান ছিলো। মেয়েদের সাথে কি কখনো যৌন মিলন করেছ?
পূর্নেন্দুঃ ক্লাস
এইটে পড়ার সময় আমার থেকে বয়সে তিন বছরের বড় এক মেয়ের সাথে যৌনমিলন করি। কিন্তু
ফার্স্ট গে সেক্স করি সেই ক্লাসমেটের সাথে, ক্লাস সেভেনে পড়ার সময়ে।
শুভ্রঃ পূর্নেন্দু, সেই দিদির সাথে কি তোমার
এখনো সম্পর্ক আছে?
পূর্ণেন্দুঃ সেই
দিদির অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গেছে, তার সাথে এখন আর কোন যোগাযোগ নেই।
শুভ্রঃ আমার
আড্ডায় এই প্রথম কেউ মেয়েদের সাথে সেক্স করার কথা বললো। অনেক সমকামী ব্যক্তি
উভকামীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করে থাকেন। কিন্তু তারা উভকামীর কষ্টটুকু অনুভব করতে
পারে না। তোমার যদি কোন সমস্যা না থাকে তবে আমাদের সাথে তোমার প্রথম গার্লসেক্সের
অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারো।
পূর্ণেন্দুঃ
প্রথম যৌনমিলন অনেকটা এক্সিডেন্টালি হয়ে যায়। তখন আমি খুব বেশী সেক্স সমন্ধে
জানতাম না। আমাদের বাড়িতে আমার থেকে বছর
তিনেকের বড় এক দিদি ভাড়া থাকতো। আমি মাঝে মাঝে তার কাছ থেকে পড়া দেখিয়ে নিতে তার
ঘরে যেতাম। একদিন আমার বাড়ির সবাই
একটা বিয়ে বাড়ীতে নেমতন্ন খেতে গেলো। আমার পরীক্ষা চলছিলো বলে যেতে পারিনি। ফাঁকা
বাড়ীতে আমার একা ঘুমাতে ভয় লাগে। রাতে দিদির ঘরে শুতে যাই। মাঝ রাতে আমি অনুভব
করলাম কেউ আমার শরীরে হাত দিয়ে আদর করছে। আমাকে চুমু খেলো। তারপর আমি সুখ সাগরে
তলিয়ে গেলাম।
শুভ্রঃ
প্রথমবার দৈহিক মিলনের পর তোমার নিজের মধ্যে কি অনুভূতি হলো? কোন পাপবোধ কি কাজ
করত?
পূর্ণেন্দুঃ প্রথম
যৌনমিলনের পর হঠাৎ মনে হলো আমি বালক থেকে যুবক হয়ে উঠেছি। যদি কেউ ব্যাপারটা জেনে ফেলে
এই ভয়ে একটা অপরাধবোধ কাজ করছিলো।
শুভ্রঃ অনুতাপ
করতে?
পূর্নেন্দুঃ
হুম।
শুভ্রঃ আচ্ছা
আমরা এবার কৈশোরের দিকে যাই। স্কুল কলেজ জীবনে চটি পড়ার একটা টেন্ডেন্সি কাজ করে।
তুমি টাইমলাইনে প্রায়শই চটি গল্পের পোস্ট শেয়ার করো। তোমার কি চটি গল্প পড়তে ভালো
লাগত?
পূর্ণেন্দুঃ সত্যি
বলতে কি চটি গল্প পড়তে ভালো লাগে। মোবাইল/ইন্টারনেট আসার আগে লুকিয়ে পড়তাম। একবার
তো মায়ের কাছে ধরা পড়ে গেলাম। যা বকুনিটাই না সেদিন খেলাম, আমি কোনদিন ভূলবো না।
এখন মোবাইল দিয়ে ইন্টারনেট থেকে পড়ি, কেউ বুঝতে পারে না।
শুভ্রঃ
ফ্যামিলি যদি তোমার যৌনজীবনের কথা জেনে ফেলে এবং মেনে নিতে না চায় তবে কি করবে?
পূর্ণেন্দুঃ যদি
আমার প্যারেন্টস জেনে যায় যে আমি একজন সমকামী তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দেবো যে আমি
আমার মত থাকতে চাই, স্বাধীনভাবে থাকতে চাই। কারণ আমি কোন ভূল কাজ করিনি, আর করবোও
না কোনদিন। এরপর তারা যদি আমাকে সন্তান হিসেবে মেনে নিতে না পারেন তাহলে আমি আমার
মত স্বাধীনভাবে বাঁচবো।
শুভ্রঃ অধিকাংশ
সমকামী বন্ধু জীবনের কোন না কোন সময়ে হতাশায় ভোগে। তাদের উদ্দেশ্যে কি বলতে চাও?
পূর্ণেন্দুঃ
সমকামীদের উদ্দেশ্যে এটাই বলতে চাই আগে নিজেকে একজন ভালো মানুষ বানাও যাতে সকলের
প্রতি তুমি সহানুভূতিশীল হতে পারো। আর একটা কথা, কাউকে ভালোবেসে কষ্ট দিয়ো না।
সমকামীদের কেবল সেক্স নয় তার চেয়েও বেশী জরুরী ভালোবাসা, বিশ্বাস আর অপরকে সম্মান
করা।
শুভ্রঃ
বিষমকামীরা মিডিয়া জগতে নায়িকার সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ হয়। রুপালী জগতের কোন
নায়কের দেহ সৌষ্ঠব তোমাকে আলোড়িত করে?
পূর্ণেন্দুঃ আমার
পছন্দের নায়ক শহীদ কাপুর।
শুভ্রঃ হুম,
শহীদ তো চকোলেট বয়। দেখতে কিন্তু কিউট ছিলো ইয়ংকালে। আমারও আগে ভালো লাগতো। এখন
মহেশ বাবুর মুগ্ধতায় ভুগি। পূর্নেন্দু ভালোবাসার মানুষ বলে কি কেউ আছে তোমার
জীবনে?
পূর্ণেন্দুঃ হ্যাঁ একজন আছে যে আমাকে অনেক ভালোবাসে এবং আমিও
তাকে খুব ভালোবাসি তার সাথেই বাকি জীবনটা কাটাতে চাই। আমি জানিনা সে আমাকে না
সমাজকে কোনটা বেছে নেবে। তাই আপাতত খুব বেশী স্বপ্ন দেখছি না।
শুভ্রঃ তোমার
স্বপ্ন পূর্নতা পাক এটাই আমার প্রত্যাশা। সব শেষে তোমার কাছে জানতে চাইবো অনু
আড্ডা তোমার কাছে কেমন আছে?
পূর্নেন্দুঃ
আমি খুব আগ্রহ নিয়ে অনু আড্ডার প্রতিটা পর্ব পড়ছি। সকলের সাক্ষাৎকার খুব এনজয়
করছি।
বন্ধুরা,
পূর্নেন্দুর পরে আগামীকাল আরো একজন ভারতীয় বন্ধু আমাদের আড্ডায় যোগ দিচ্ছেন। তুমিও
যোগ দিতে চাইলে মন্তব্যে লেখো #অনু_আড্ডা । গরম গরম সাক্ষাৎকারটি পড়তে আমাদের
পাতায় লগিন করো ঠিক দুপুর ১২ টা বেজে ১২ মিনিটে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন