অনুআড্ডা -১৭ঃ অঞ্জন রয়।



#অনুআড্ডা -১৭ presents মিষ্টি পোলা অঞ্জন রয়। যে অঞ্জন রয়ের কথা আমরা আগের দুটি সাক্ষাৎকারে দুজন গেস্টের মুখে শুনেছিলাম। বন্ধুরা আসো শুনি সেই জগদ্বিখ্যাত অঞ্জন রায়ের কথা।

শুভ্রঃ অঞ্জন তোকে বাংলা খ্যাত শ্রীপুরের ট্যাবলেটের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের অনুষ্ঠান।  সবাইকে শেষে যে প্রশ্ন করি তোকে শুরুতেই সেটা জিজ্ঞেস করবো। তোর জীবনে কি স্পেশাল কেউ আছে?
অঞ্জনঃ হুম আছে। তার সাথে আমি আমি সারা জীবন একজন বন্ধু হিসেবে কাটাতে চাই।

শুভ্রঃ আমরা কি সেই সৌভাগ্যবানের নাম জানতে পারি?
অঞ্জনঃ না। নাম বলা যাবে না

শুভ্রঃ অধিকাংশ মানুষ বিশেষ একটা ঘটনার মাধ্যমে বুঝতে পারে যে সে একজন পুরুষাসক্ত ব্যক্তি। তোর ক্ষেত্রে এটা কিভাবে হলো?
অঞ্জনঃ আমি প্রথম সেক্স করি ১৪ বছর বয়সে। তখনো বুঝতাম না সমকামিতা জিনিসটা কি! এটার ব্যাপারে প্রথম জানি আরো তিন বছর পরে। তখন আমার বয়স সতেরো বছর। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই আমি বুঝতে পারি যে আমি গে।

শুভ্রঃ হস্তমৈথুনের ব্যাপারে তোর অভিমত কি?
অঞ্জনঃ হস্তমৈথুন একটা স্বাভাবিক বিষয়। এটা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করার কিছু নেই। আমার মতে এটা র্যা ন্ডম সেক্স করার মানসিকতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

শুভ্রঃ আচ্ছা ১৪ বছরেই তো তুই প্রথম যৌনানুভূতি পেলি। তো সেক্সের পর তোর নিজের মধ্যে কি ধরণের চিন্তা ভাবনা কাজ করতো?
অঞ্জনঃ সেক্স করার পর অনেক গিলটি ফিল করতাম। নিজেকে অনেক ছোট বলে মনে হয়েছে। মনে হত এই কাজটি ঠিক হয় নাই।

শুভ্রঃ আচ্ছা। তারপরেও পদ্মা দিয়ে অনেক পানি গড়িয়েছে। মাওয়া ঘাটের কারিগরেরা অনেক স্পঞ্জ মিষ্টি বানিয়েছে। তা আমার পাঠকের কি জানতে পারে এর পরে তোর যৌন জীবন কেমন চলেছে?
অঞ্জনঃ এই প্রশ্নের উত্তরটা না হয় অজানাই থাকুক।

শুভ্রঃ সমকামীদের কোন জিনিসটা তোর খুব অপছন্দের?
অঞ্জনঃ কনডোম ফ্রি সেক্স সাপোর্ট করি না।

শুভ্রঃ অবশ্য অনেক সমকামীর ভিতর এই ধারণা প্রবল দেখেছি যে তারা মনে করে বেয়্যারব্যাক সেক্সে বেশী আনন্দ পাওয়া যায়। বাংলাদেশে সমকামীরা কি কখনো সমধিকার পাবে বলে তুই মনে করিস?
অঞ্জনঃ আমরা গে রা যদি এক হতে পারি তবে অবশ্যই আসবে।

শুভ্রঃ এখন দেখার বিষয় সব সমকামী বন্ধুরা এক হতে পারে কিনা। অধিকাংশ সমকামির ভেতর বাজারের সেরা মালটা তার হবে টাইপের টেন্ডেসি পরিলক্ষিত হয়। সমকামী বন্ধুদের উদ্দেশ্যে কোন পরামর্শ?
অঞ্জনঃ গাইস, যৌনমিলনের সময় অবশ্যই কনডোম ব্যবহার করবে। কারণ সামান্য ভূল সারা জীবনের জন্য কান্না বয়ে আনতে পারে। এবং সবসময় নিজেকে ভালোবাসো।

শুভ্রঃ সুদর্শনেরা একটু বেশী বেশী নিজেকে ভালোবাসে। আর যারা নিজেকে ভালোবাসে তারা কিন্তু একটু অহংকারী টাইপের হয়বিয়ে নিয়ে চিন্তা ভাবনা কি? একটা সময় না একটা সময় পরিবার কিন্তু বিয়ের জন্য প্রচন্ড চাপ দেবে। যারা এটা ফেস করেনি তারা এই ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারবে না।
অঞ্জনঃ আমি বিয়ে নিয়ে এখনও ভাবছি না কিন্তু আমার মনে হয় আমি বিয়ে করে সুখি হতে পারব না।

শুভ্রঃ তোর কেন মনে হচ্ছে বিয়ে করে তুই সুখী হতে পারবিনা? রাইফেলের জায়গায় কি পিস্তল?
অঞ্জনঃ কারন কোনা মেয়ের জীবন নষ্ট করার অধিকার আমার নেই।

শুভ্রঃ জীবনে প্রতিনিয়ত আমরা নানা পরিবেশে নানা কারণে অভিনয় করে চলেছি। সমকামী হয়ে বিয়ে করলেই কি একটি মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যায়! যাই হোক এটা একান্তই তোর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এখন বল, কখনো প্রেম করেছিস?
অঞ্জনঃ হুম, আমি প্রেম করেছি। ছেলের সাথে।

শুভ্রঃ ওয়াও। দ্যাটস গ্রেট! কে প্রপোজ করেছিলো তুই না তোর #বয়ফ্রেন্ড?
অঞ্জনঃ প্রপোজ কে আগে করেছে তা ঠিক এই মুহুর্তে মনে করতে পারছি না।

শুভ্রঃ অপ্রিয় হলেও সত্য আমি আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক দেখতে পেলাম না। তোর সেই সম্পর্ক আছে না গেছে?
অঞ্জনঃ না নেই। সম্পর্ক ভেঙ্গেছে এবং দুজনের সম্মতিতে সম্পর্ক ভেঙ্গেছে।

শুভ্রঃ সম্পর্কে ভেঙে যাওয়ার পর দেখা যায় ফেসবুকে কোন একজন অন্যজনের নামে অপপ্রচার শুরু করে। বাজে বাজে টেক্সট দেয়। তার ছবি প্রকাশ করে। অতি সম্প্রতি খুলনার ছেলে অনুপম রয়কে নিয়ে তার সাবেক বয়ফ্রেন্ড ফিরোজ এই ধরণের কাজ করছে। তোর ক্ষেত্রে কি এরকম কিছু হয়েছিলো?
অঞ্জনঃ না। এরকম কিছুই হয়নি। সব মানুষ একরকম নয়। আমরা এখনও ভালো বন্ধু আছি।

শুভ্রঃ শুনে খুবই ভালো লাগলো। আচ্ছা কখনো চটি গল্পের বই পড়েছিস? কলেজ বা স্কুল জীবনে? আমি পড়ি কলেজ লাইফে। আজো সেই গল্পটা মাথায় আসে।
অঞ্জনঃ না পড়ি নি। 

শুভ্রঃ আচ্ছা তোর সমকামী পরিচয়ের কথা কি তোর পরিবার জানে?
অঞ্জনঃ না জানে না। যদি আই মুহূর্তে বাবা মা জেনে যায় তাহলে আমি তাঁদের কিছু বলব না আসলে তারা ব্যাপার টা বিশ্বাস করবে না।

শুভ্রঃ তুই কি তাদের বিশ্বাসের সুযোগ নিচ্ছিস না? বাবা মায়ের সাথে যদি অভিনয় করা যায় তবে একজন মেয়ের সাথে করলে এমন কি মহাভারত অশুদ্ধ হবে!
অঞ্জনঃ আমি এটা সারাজীবনের জন্য লুকিয়ে রাখবো না। আমি যখন সাবলম্বী হবো তখন নিজে থেকেই বাবা মা কে জানাব। এখনো আমি তাঁদের উপর নির্ভর করি তাই এখনই এটা তাঁদেরকে জানাতে চাচ্ছি না

শুভ্রঃ সেক্স নাকি রোমান্স কোনটা তোকে বেশী টানে?
অঞ্জনঃ দৈহিক কামনা ফিল করাটাই স্বাভাবিক কিন্তু আমি প্রেম-রোমান্স টাকে বেশি ফিল করি।

শুভ্রঃ সমকামী জীবন নিয়ে তোর বর্তমান ফিলিংস কেমন?
অঞ্জনঃ যখন প্রথম জানতে পারি যে আমি সমকামী তখন নিজের উপর রাগ হতো, তখন মনে হত আমি একা। এমন কি নিজেকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু এখন ফেসবুকে আসার পর একা মনে হয় না। আমরা সবাই দূরে দূরে থাকি কিন্তু সবাই একে অন্যকে ঘিরে থাকি সারাক্ষণ। আমি সমকামী হয়ে আমার বন্ধুদের নিয়ে ভালো আছি।

শুভ্রঃ অনু আড্ডা সম্পর্কে তোর অভিমত কি?
অঞ্জনঃ এটা মানুষ এবং তাদের চিন্তাভাবনা জানার জন্য চমৎকার একটি প্লাটফর্ম। অন্যদের কেমন লাগে জানিনা, আমার কাছে বেশ লাগে। আমি তো প্রতিদিন পড়ি। প্রতিটা পর্ব মনোযোগ দিয়ে পড়ি।
বন্ধুরা, অঞ্জনকে আমি প্রশ্ন করা শেষ করছি। অঞ্জনের কাছে তোমার কিছু জিজ্ঞেস করার থাকলে মন্তব্যে জিজ্ঞেস করতে পারো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আমাদেরও কিছু গল্প আছে। শোনার মত মানসিকতা কি আছে তোমার?

আমাদেরও কিছু গল্প আছে। শোনার মত মানসিকতা কি আছে তোমার?